ওরা সারাক্ষণ করে খাই-খাই। কারও বা আবার প্রমাণ সাইজের খাবার দেখলে হুঁশ থাকে না। সে খাবার হোক না নিজ আয়তনের চেয়ে বড়, ঘপাৎ করে গিলে ফেলবে।
আর্জেন্টিনায় এক ধরনের ব্যাঙ পাওয়া যায়, যা আর্জেন্টাইন হর্নড ফ্রগ বলে পরিচিত। এটাকে প্যাকম্যান ফ্রগও বলে। বাংলায় বলতে পারো শিঙেল ব্যাঙ। তা যা-ই বলো না কেন, ব্যাঙটি বেজায় পেটুক। পোকামাকড় তো খায়ই, ইঁদুর বা গিরগিটি পেলেও ঝাঁপিয়ে পড়ে। এমনকি তার চেয়ে বেশ বড় কোনো প্রাণীকে চওড়া মুখ দিয়ে শিকার বানাতে পরোয়া করে না। ব্রাজিল আর উরুগুয়েতেও এই ব্যাঙের দেখা মেলে।
পেটুক বা খাদক হিসেবে খুদে শুঁয়াপোকার জুড়ি মেলে না। একটি শুঁয়াপোকা ২০ দিনেরও কম সময়ে তার ওজন ১০ হাজার গুণ বাড়াতে পারে। আর তা বাড়ায় গাছের লতাপাতা বা ছাল বাকল খেয়ে।
খুদে প্রাণীর কথা যখন এসেই গেল, বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পাখি হামিংবার্ড আর বাদ থাকবে কেন? সাইজে ওরা এইটুকুন হলে কী হবে, খাদক হিসেবে ভয়ংকর। প্রতি ১০ মিনিট পর খাবার চাই। একটি হামিংবার্ড এক দিনে গড়ে কত খাবার খায় জানো? শরীরের মোট ওজনের দুই-তৃতীয়াংশ পরিমাণ খাবার।
মাটি আর আকাশের পেটুকদের কথা তো বলা হলো, এবার একটু পানির নিচে ঘুরে আসা যাক। টাইগার শার্ক বলে যে বাঘা হাঙর রয়েছে, দুনিয়ার কোনো খাদক ওদের সঙ্গে টক্কর দিতে পারবে না। কারণ, ওরা সামনে যা দেখে, তা-ই খায়। শিকারিরা এসব হাঙর ধরার পর পেট চিরে স্যামন মাছ বা কাছিমের মতো উপাদেয় খাবারের সঙ্গে মানুষের ব্যবহার করা বর্ম, কোট, জুতা, লাইসেন্স নম্বর বসানো ফলক, টিনের পাত্র ইত্যাদি পেয়েছেন।
তবে পানিতে বাস করা প্রাণীর মধ্যে পেটুক-রাজ হচ্ছে নীল তিমি। একটি নীল তিমি প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার কেজির বেশি খাবার খেয়ে থাকে। খাবারের তালিকায় সবচেয়ে বেশি থাকে ক্রিল বলে পরিচিত এক ধরনের খুদে সামুদ্রিক প্রাণী।
রক্তচোষা নিশাচর প্রাণী বা ভ্যাম্পায়ার হিসেবে ড্রাকুলা গল্প-উপন্যাসে দাপিয়ে বেড়ালেও আসল রক্তচোষা হচ্ছে ‘ভ্যাম্পায়ার ব্যাট’। ওরা এক ধরনের বাদুড়। রক্ত ছাড়া ওদের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। এই বাদুড় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রাণীর শরীর থেকে নিজ ওজনের চেয়ে বেশি পরিমাণ রক্ত পান করে।
‘তাসমানিয়ান ডেভিল’ বলে অস্ট্রেলিয়ায় একটি স্তন্যপায়ী মাংসাশী প্রাণী রয়েছে। ওরা সাধারণত মৃত প্রাণী পছন্দ করে। মাত্র আধা ঘণ্টায় প্রাণীটি নিজ ওজনের ৪০ শতাংশ খাবার সাবাড় করতে পারে।
No comments:
Post a Comment